
উড়না, দৈনন্দিন জীবনে অনেক নারীর পোশাকের অংশ। সৌন্দর্য ও শালীনতার প্রতীক হলেও উড়নার একটি দিক প্রায়ই অবহেলিত থাকে, আর তা হলো নিরাপত্তা। বিশেষ করে রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল বা খোলা ধরনের যেকোনো যানবাহনে বসার সময় উড়না অসতর্কভাবে ঝুলে থাকলে মুহূর্তের মধ্যেই বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
শহরের রাস্তাঘাটে প্রতিদিনই আমরা দেখি রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল কিংবা হাইওয়ে ধরে ছুটে চলা বাসের ভিড়। ব্যস্ততা আর তাড়াহুড়োর মুহূর্তে নিজেদের কাপড়চোপড় ঠিকমতো দেখা হয়ে ওঠে না। আর সেই অবহেলার ক্ষুদ্র ফাঁকটুকুই উড়নাকে একসময় টেনে নিয়ে যায় চাকার ঘূর্ণিতে, বাতাসের উন্মত্ত টানে কিংবা মেশিনের ধাতব কোলাজে বাংলাদেশে রিকশা চলাচল অত্যন্ত সাধারণ। রিকশার চাকা, চেইন বা স্প্রোকেটে উড়না পেঁচিয়ে যাওয়ার খবর প্রায় সময় সংবাদমাধ্যমে দেখা যায়। তবে সমস্যা হলো এ ধরনের দুর্ঘটনা এতটাই দ্রুত ঘটে যে প্রতিক্রিয়া জানানোর সুযোগ থাকে না। একটি পেঁচিয়ে যাওয়া উড়না শুধু শ্বাসরোধের ঝুঁকিই তৈরি করে না, বরং যাত্রীকে রিকশা থেকে নিচে ফেলে দিতে পারে, ঘাড় বা পিঠে আঘাত লাগতে পারে, এমনকি জীবননাশের ঝুঁকিও তৈরি হয়।
উড়না টেনে ধরলে শ্বাসরোধের আশঙ্কা থাকে, ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যেতে পারে, এমনকি গুরুতর আঘাতও লাগতে পারে। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো এই বিপদ আসে নিঃশব্দে, হঠাৎ করে, কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই।
মোটরসাইকেল বা স্কুটারে বসার সময় ঝুঁকি আরও বেশি। এর চলার গতি বেশি, এবং যাতায়াতে বাতাসের চাপ উড়নাকে পেছনে ছুঁড়ে দেয়, যা সহজেই চাকার সঙ্গে পেঁচিয়ে যেতে পারে। চালক ও আরোহী দুজনই এতে বিপদে পড়ে।
নিরাপত্তা মানে শুধু হেলমেট, সিটবেল্ট বা ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে চলা নয় পোশাকের নিরাপদ ব্যবহারও এর অংশ। উড়না যতই প্রাত্যহিক হোক, এটি অবহেলা করার মতো নয়। উড়না আমাদের সৌন্দর্যের, পরিচয়ের ও শালীনতার অংশ কিন্তু সতর্কতার অভাবে এটি হয়ে উঠতে পারে অপ্রয়োজনে বিপজ্জনক। যানবাহনে বসার মুহূর্তেই উড়নাকে একটু সামলে রাখা আমাদের নিজেরই নিরাপত্তার প্রথম শর্ত। ব্যক্তিগত সচেতনতার পাশাপাশি পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে উড়নার নিরাপদ ব্যবহারে সচেতনতা তৈরি করতে।
তৌহিদ-উল বারী
শিক্ষার্থী ও তরুণ লেখক