
পৌরসভা প্রতিনিধি::: চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার দক্ষিণ জলদী ৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবৈধভাবে পাহাড় কেটে বসতবাড়ি ধ্বংসের উপক্রম ও পরিবেশ বিপর্যয়ের অভিযোগ উঠেছে একদল প্রভাবশালী ও ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে হানুয়ারা বেগম নামে এক ভুক্তভোগী ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, শফিউল আলম, তার ছেলে এবাদুল্লাহ, রহমত উল্লাহ, স্ত্রী জোহেরা খাতুন এবং কহিনুর আক্তার সহ কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পাহাড় কাটছেন ও ফলজ-বনজ গাছ নিধন করছেন। এতে পাহাড়ের নিচে বসবাসকারী স্থানীয় কয়েকটি পরিবার ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। পাহাড়ের নিচের অংশ সরে যাওয়ায় ইতোমধ্যে কয়েকটি ঘরবাড়ি ক্ষতির মুখে পড়েছে, ঘটতে পারে বড় ধরনের প্রাণহানি।
হানুয়ারা বেগম বলেন, ‘তারা সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রকাশ্যে দিবালোকে পাহাড় কেটে যাচ্ছে। আমরা দিনরাত আতঙ্কে আছি। যেকোনো সময় পাহাড় ধসে আমাদের ঘরবাড়ি চাপা পড়তে পারে।’
তার অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, একাধিকবার নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও প্রভাবশালী সিন্ডিকেট তা উপেক্ষা করে পাহাড় কাটার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলের স্থিরচিত্র ও তথ্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘পাহাড় কাটার কারণে বৃষ্টির সময় কাঁদামাটি নেমে আসে। আমাদের সন্তানদের জীবন সুরক্ষাও হুমকির মুখে।’ মনছুর নামে আরেকজন বলেন- ‘প্রশাসন আসলে তারা কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখে, আবার পরে রাতের বেলা চালিয়ে যায়।’
অভিযুক্ত শফিউল আলমের পুত্র এবাদুল্লাহ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সরাসরি কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওমর সানী আকন জানান, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবৈধভাবে পাহাড় কাটার মতো অপরাধের বিষয়ে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে।’
এ বিষয়ে স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা জানান, এভাবে পাহাড় কেটে চলতে থাকলে শুধু মানববসতি নয়, সমগ্র এলাকার পরিবেশব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে। বর্ষা মৌসুমে বড় ধরনের ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি হবে। নাগরিক নিরাপত্তা, পরিবেশ সুরক্ষা এবং আইন অমান্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।