1. news@banshkhalisanglap.com : বাঁশখালী সংলাপ : বাঁশখালী সংলাপ
  2. info@www.banshkhalisanglap.com : বাঁশখালী সংলাপ :
শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাঁশখালীতে ঋষিধাম মহারাজের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে অধ্যক্ষ মাওলানা জহিরুল ইসলাম বাঁশখালীতে অগ্নিদুর্গত পাঁচ পরিবারের মাঝে জামায়াতের অর্থ সহায়তা চাম্বল খাদিজাতুল কোবরা মহিলা দাখিল মাদরাসার এডহক কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ইসমাইল “শীলকূপ” শাহ আমিনিয়া সড়ক সংস্কার চাই বাঁশখালীতে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত গোপনীয়তার দেয়াল ভেঙে সহিংসতার মঞ্চে ফেসবুক স্বর্ণের প্রলোভনে প্রতারণার ফাঁদে ‘আবদুছ সবুর’ এর গল্প মাধ্যমিকে স্কুল পর্যায়ে রফিকুল ইসলাম গুণী শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত মাদরাসা পর্যায়ে বাঁশখালীর গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হলেন মুহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন ওয়াশরুমে আটকা পড়া স্কুলছাত্রীকে বাঁশখালী ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান

বাঁশখালীতে অনাবৃষ্টির ফলে লিচুর ফলন বিপর্যয়, হতাশ বাগান মালিক-চাষীরা

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ৯ মে, ২০২৫
  • ৬১ বার পড়া হয়েছে

*বাঁশখালীতে ৭১০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ* চলতি বছরে ৪৫-৫০ শতাংশ গাছে মুকুল আসেনি* হতাশায় ৯০ শতাংশ লিচু বাগান মালিক-চাষী।

শিব্বির আহমদ রানা: বাঁশখালীর কালীপুর আগাম লিচুর জন্য বিখ্যাত একটি জনপদ। কালীপুরের পূর্ব পাহাড়ি অঞ্চলে দিগন্তজোড়া বিস্তৃত লিচু বাগান যে কারও দৃষ্টি কাড়ে। দৃষ্টি যতদূর যায় দেখা যায় পাহাড়ের পাদদেশ জুড়ে লিচু গাছের বিশাল ছাউনি। পাহাড়ী বাগান ছাড়াও এ লিচু সোভা পায় কালীপুরের প্রতিটি বাড়ির ছাদ বাগানেও। তবে, বাঁশখালীতে এবার লিচুর ফলন বিপর্যয় হয়েছে। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ফলন মোটেও ভালো হয়নি। মূলত অনাবৃষ্টি ও টানা তাপপ্রবাহের কারণে এ ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। কোনো কোনো বাগানে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ গাছে মুকুল পর্যন্তও আসেনি। যে কয়টি বাগানে লিচুর ফলন হয়েছে তাও আবার আকারে ছোট।

বাগান মালিক ও চাষিদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ‘এ বছর অনেক বাগানের লিচু গাছে ফুলও ফোটেনি। আবার কিছু কিছু বাগানে লিচুর ফুল ও মুকুল ঝরে পড়ায় আশানুরূপ ফল আসেনি। আকার ছোট হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে এবছর বাঁশখালীর কালীপুরের লিচু বাগান মালিক ও মৌসুমি লিচু ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হচ্ছে। গতবছর যে বাগানে ৫ লাখ টাকার লিচু বিক্রি হয়েছে, এবার একই বাগানে ২ লাখ টাকার লিচু বিক্রি হবে কি-না আশঙ্কা রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ‘উপজেলার জঙ্গল কালীপুর এলাকায় বেশিরভাগ গাছ লিচু শূন্য। এমনকি বাসা-বাড়ির লিচু গাছেও তেমন লিচু ফলেনি। বিগত ২০ ধরে মৌসুমভিত্তিক লিচুর বাম্পার ফলনে অনেকে লিচু চাষে জড়িয়েছেন। অন্য ফসল উৎপাদন ছেড়ে দিয়ে এ লিচু চাষে ঝুঁকেছেন অনেকে। লিচুগাছ-বাগান নেই, একটিও বাড়ি খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রতিটি বাড়ি কিংবা জমিতে রোপণ করা হয়েছে লিচুগাছ। গত ২০ বছরে এ ইউনিয়নে লিচু চাষ ব্যাপক হারে বেড়েছে। তবে, এবারে লিচুর কম ফলন হওয়াতে হতাশ চাষি ও বাগান মালিকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ‘দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে লিচু চাষ। কম খরচে অধিক মুনাফার আশায় প্রতি বছরই কৃষকরা ঝুঁকছেন এই চাষাবাদের দিকে। তবে উপজেলার জঙ্গল কালীপুরে ব্যাপকভাবে লিচুর চাষ হয়। স্থানীয় কালীপুরী জাতের লিচুর পাশাপাশি উন্নত জাতের লিচু যেমন- বোম্বাই, চায়না-২, চায়না-৩, মোজাফফরী চাষও দিন দিন বাড়ছে। বাঁশখালী কালীপুরের লিচু অনেকটা দিনাজপুরের লিচুর মতো হলেও এটি আকারে একটু ছোট। কিন্তু স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়। বাঁশখালীতে এবছর ৭১০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে, যার মধ্যে শুধু কালীপুরেই ২৮০ হেক্টর। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো না থাকায় সন্তোষজনক ফলন হয়নি। বাজারে এখন যে লিচু পাওয়া যাচ্ছে তা আকারে ছোট। দু’তিন দিনের মধ্যে রসালো ও বড় আকারের লিচু পাওয়া যাবে।’

জঙ্গল কালীপুরের স্থানীয় লিচু বাগানের মালিক আবুল কাশেম সোহাগ বলেন, ‌‘বেশ কয়েক বছর ধরে লিচু চাষের সঙ্গে জড়িত আমরা। আমাদের পৈত্রিক দু’টি লিচু বাগান আছে। আমাদের ২০ কানি লিচু বাগানে প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০টি ছোট-বড় লিচু গাছ রয়েছে। আমাদের চার ভাইয়ের যৌথবাগান। বাগানে ফুল আসার পরপরই আমরা চাষিদের বিক্রি করে দিই। গতবছর ফুল ফোটার পরে ৩ লক্ষ টাকায় বাগান বিক্রি করে দিই। এ বছর ২০০ থেকে ২৫০টি গাছে মুকুলও আসেনি। দু’টি বাগান ও সাথে পেয়ারা সহ এ বছর বিক্রি করেছি ৮০ হাজার টাকায়।’

কালীপুরের পালেগ্রামের লিচু চাষী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর ৯০ শতাংশ লিচু বাগান মালিক ও চাষী হতাশ। লিচু গাছে ফুল আসার আগে বৃষ্টি না হওয়াতে এ এলাকার ৫শতাধিক বাগানে লিচু আসেনি। এ বছর আমি ৪ লক্ষ টাকায় যে বাগান নিয়েছি তাতে কিটনাশক ব্যবহার, পানি সেচ, পরিচর্যা ও লেবার খরচ বাবদ দেড় লক্ষ টাকা খরচ করেছি। কোনো রকম ওই দেড় লক্ষ টাকা উঠাতে পারবো। লস থেকে যাবে ৪ লক্ষ টাকা। এবছর লিচুর আশানুরুপ ফলন না হওয়াতে হাজার হাজার লিচু চাষী হতাশ।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাজারে যে লিচু এসেছে তার মধ্যে ভালোটা শতপ্রতি ৩৫০-৪০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১২শত লিচু পাইকারী দরে ৩ হাজার ৪ শত থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এখন মাঝারি আকারের লিচুগুলো এসেছে। দু-তিন দিনের মধ্যে রসালো ও বড় আকারের লিচু বাজারে আসতে শুরু করবে।’

কালীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, ‘এবার তীব্র খরা ও আবহাওয়া ভালো না থাকায় লিচুর ফলন তেমন ভালো হয়নি। তুলনামূলক খরচ বেড়েছে। সবমিলিয়ে লিচু চাষিরা খুশি না।’

এ বিষয়ে বাঁশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু সালেক বলেন, ‘মৌসুমী ফলের মধ্যে বাঁশখালীর কালীপুরের লিচু স্পেশাল একটি ফল। এখানে বাণিজ্যিকভাবে লিচুর চাষাবাদ হয়। আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী স্থাপন, পরামর্শ, দলীয় আলোচনা,  ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে লিচু চাষী-বাগানীদের সহযোগিতা করেছি। এ বছর অনাবৃষ্টির ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ মুকুল না আসায়, অসময়ে কুয়াশা পড়ায় ফলন ভালো আসেনি। তাছাড়া সঠিক সময়ে সেচ না দেওয়ায় (গভীর পাহাড়ে সেচের সমস্যা) এ সমস্যা হতে পারে। অধিকাংশ বাগান মালিক নিজে চাষ না করায় বাগানের পরিচর্যাও ভাল করে হয় না। অনেকে হরমোন ব্যবহার করে ফলে পরবর্তী বছরগুলোতে ফুল আসে না, বাগানের সমস্যা সৃষ্টি হয়। আবহাওয়াগতভাবেও লিচু চাষ কিছু টা কম হয়। বৃষ্টি কম হলে, বাগানে সঠিক সময়ে পানি দিতে না পারলে ভালো ফলন আসে না। এবার অনাবৃষ্টিতে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে। ফলনও বেশ কম হয়েছে। তবে প্রযুক্তিনির্ভর পরিচর্যা এবং সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে এই ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।’

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট