
একসময় বাঁশখালীর সরকারি আলাওল কলেজ ছিল শিক্ষার গর্ব। ফলাফল, শৃঙ্খলা আর সুনাম-সব মিলিয়ে ছিল এলাকাবাসীর আশার কেন্দ্র। কিন্তু সেই আলাওল কলেজের চিত্র এখন যেন উল্টে গেছে।
কিছুদিন আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল কলেজটির বিদায় অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও। সেখানে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা নাচ-গান, টিকটকধর্মী নানা কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছে। ভিডিওটি প্রকাশের পর শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। অনেকে মন্তব্য করেছিলেন এটা বিদায় অনুষ্ঠান নয়, যেন টিকটক প্রতিযোগিতা!
তখনই অনেকেই সতর্ক করেছিলেন, এমন পরিবেশ শিক্ষার ক্ষতি করবে, শিক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট করবে। কিন্তু সেই সতর্কবার্তা তখন কেউ শুনেনি। আজ যেন সেই আশঙ্কাই বাস্তবে রূপ নিচ্ছে।
সাম্প্রতিক এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলেই মিলেছে তার প্রমাণ। আলাওল কলেজের মোট ৭৫৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে মাত্র ২৪৯ জন, ফেল করেছে ৫০৫ জন। অর্থাৎ প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য যা পুরো বাঁশখালীতে হতবাক করে দিয়েছে সবাইকে।
এখন প্রশ্ন উঠছে যে কলেজে নাচ-গান আর ভিডিও বানানোই আনন্দের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, সেখানে বই-পড়ার আগ্রহ কতটা থাকে? যেখানে বিদায় অনুষ্ঠানের আবেগ হারিয়ে যায় ফেসবুক লাইভ আর টিকটকের ঝলকে, সেখানে শিক্ষা কি টিকতে পারে?
এই দায় কার শিক্ষার্থীর, শিক্ষকের, না কি পুরো ব্যবস্থার?
যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিনোদনের মঞ্চে পরিণত হয়, তখন ফলাফল এমনই হয় এমনটাই বলছেন স্থানীয় অভিভাবকেরা।
এক সময়ের সুনামধন্য আলাওল কলেজ এখন যেন দাঁড়িয়ে আছে এক কঠিন বাস্তবতার সামনে
যেখানে আলো হারিয়ে যাচ্ছে শিক্ষায়, কিন্তু নাচ-গানের রেশ এখনো কাটেনি।
লেখা- কে. এম. মুরাদ