মোক্তার আহমদ: চট্টগ্রামের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত বাঁশখালী উপজেলা যেন এক অনন্য পর্যটন স্বর্গরাজ্য। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য, পাহাড়-সমুদ্রের মিলন, চা বাগানের সবুজে মোড়ানো ঢেউখেলানো জমি আর একের পর এক বিনোদনকেন্দ্র মিলে বাঁশখালী আজ পর্যটকদের প্রথম পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
উত্তর দিকে ১ নম্বর পুকুরিয়া থেকে দক্ষিণের পুঁইছড়ি পর্যন্ত বিস্তৃত এই উপজেলায় রয়েছে ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। একদিকে পাহাড়, অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশি—দুই বৈচিত্র্যের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এ জনপদ।
চা বাগান: চট্টগ্রামের গর্ব। চট্টগ্রামের একমাত্র এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চা বাগান অবস্থিত পুকুরিয়া ইউনিয়নে। হাজারো শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করছেন এই বাগানে। বর্ষা শেষে শীতের শুরুতে এখানে ভিড় করেন শত শত পর্যটক।
বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত: বিশ্বখ্যাত কক্সবাজারের পরেই অবস্থান করছে বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত। খানখানাবাদ, বাহারছড়া, কাথরিয়া ও সরল ইউনিয়নজুড়ে বিস্তৃত এই সমুদ্রসৈকত প্রকৃতি প্রেমী ও ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এক অপার আকর্ষণ।
ইকোপার্কের ঝুলন্ত সেতু: শীলকূপ ইউনিয়নের পূর্ব পাহাড়ে বন বিভাগের উদ্যোগে গড়ে ওঠা বাঁশখালী ইকোপার্ক ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রায় ১ হাজার একর বনভূমি, ৭ কিলোমিটার লেক এবং বাংলাদেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু এখানকার মূল আকর্ষণ।
আধুনিক শিল্পের প্রতীক কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র: গন্ডামারা ইউনিয়নে বঙ্গোপসাগরের তীরে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের বৃহত্তম কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র বাঁশখালীকে শিল্পায়নের নতুন দিগন্তে পৌঁছে দিয়েছে।
নতুন বিনোদনকেন্দ্র আমেনা পার্ক: পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ব্যক্তিমালিকানায় প্রতিষ্ঠিত। মিনি কাশ্মীর: চাম্বল ইউনিয়নের প্রাকৃতিক পাহাড়ি সৌন্দর্যে ঘেরা সবুজের সমাহার।
তারেক পার্ক: নাপোড়া ইউনিয়নের পাহাড়ের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা নয়নাভিরাম পার্ক।
উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম—পুরো বাঁশখালী যেন এক বিশাল প্রাকৃতিক বিনোদনকেন্দ্র। পাহাড়ের রূপ, সমুদ্রের নীল, চা বাগানের সবুজ, আধুনিক শিল্প আর বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা পার্কসমূহ মিলিয়ে বাঁশখালী এখন শুধু একটি উপজেলা নয়, বরং বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন সম্ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু।
সাংবাদিক মোক্তার আহমদ
উদ্যোক্তা ও সমাজ সেবক