
নিজস্ব প্রতিবেদক:: বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ মসজিদের ঠিক পাশে নারী-পুরুষের বিভিন্ন চিত্র ও ভাস্কর্যসংবলিত একটি মুক্তমঞ্চ নির্মাণের অভিযোগে স্থানীয় মুসল্লি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। পর্দা টাঙিয়ে গোপনে কাঠামোটি নির্মাণ করায় এলাকায় প্রশ্ন এবং সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মসজিদের নিকটে মানবমূর্তি বা ভিজ্যুয়াল প্রতিচ্ছবি স্থাপন ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের শামিল। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
মসজিদসংলগ্ন এলাকায় নামাজ আদায় করতে আসা এক মুসল্লি বলেন, ‘মসজিদের পাশে মানুষের প্রতিমূর্তি বা অশোভন কোনো চিত্র স্থাপন মুসল্লিদের মনোযোগে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। প্রশাসনের স্পষ্ট ব্যাখ্যা জরুরি।’

আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ‘দেশজুড়ে ভাস্কর্য ইস্যুতে অতীতের বিতর্ক এখনো মানুষের মনে আছে। সেই অভিজ্ঞতার কারণে মসজিদের পাশে এমন স্থাপনা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।’
স্থানীয় তৌহিদী জনতা ও বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঘটনাটির দ্রুত সমাধানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তাদের মতে, ধর্মীয়–সংবেদনশীল অঞ্চলে যেকোনো স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে আগে জনগণের মতামত নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন।
এ বিষয়ে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জামশেদুল আলম বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ মাঠের পূর্ব কর্ণারে একটি আধুনিক মুক্তমঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে বাঁশখালীর ঐতিহ্য-ইকোপার্ক, চা-বাগান ও স্থানীয় সংস্কৃতিচিত্র তুলে ধরা হচ্ছে। ‘মূর্তি’ বলতে এখানে মূলত চা শ্রমিকদের শিল্পচিত্র বোঝানো হয়েছে।’
জনগণের আপত্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যদি এলাকাবাসী এ ধরনের স্থাপনায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করেন, তাহলে আমরা তা সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেব। আমাদের উদ্দেশ্য কেবল বাঁশখালীর ঐতিহ্যকে সাংস্কৃতিকভাবে উপস্থাপন করা।’
বাঁশখালী মালেকা বানু মসজিদের খতিব মুফতি নুরুল আমিন বলেন, ‘মসজিদের সম্মান ও পবিত্রতা রক্ষার ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরি। মানবমূর্তি, প্রতিকৃতি বা মানুষের ত্রিমাত্রিক প্রতিচ্ছবি মসজিদের পাশে স্থাপন শরীয়তসম্মত নয় এবং মুসল্লিদের খুশু-খুযুতে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে। প্রশাসন বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে বলে আমরা আশা করি।’
এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছে- বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা, প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা প্রদান, এবং মসজিদের পরিবেশের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখার মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ঘটনাটি বর্তমানে এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।