দক্ষিণ চট্টগ্রামের একটি উপজেলা বাঁশখালী। যার প্রধান সড়ক; তীব্র যানজট ও ভাড়া নৈরাজ্যের স্বর্গরাজ্য। এই সড়কের একদিকে যেমন থাকে তীব্র যানজট অন্যদিকে থাকে ভাড়া নৈরাজ্যের মতো যান মালিক পক্ষের দিন দুপুরে ডাকাতির দৃশ্য। এমন চিত্রে বরাবরের মতোই অতিষ্ঠ বাঁশখালীর সাধারণ যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার এলেই চালকদের আসল রুপ স্পষ্ট দেখা যায়। কম বেশি ত অন্যান্য সময়ে আছেই। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসাবে চট্টগ্রাম শহর থেকে ঘরমুখো যাত্রী বৃহস্পতিবারে একটু বেশিই থাকে। এ সুবাদে কিছু চালক তাদের ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করে যাত্রীদের কাছ থেকে। এমনও দেখা যায় যেখানে নতুন ব্রিজ থেকে ১২০ টাকার ভাড়া তারা সেখানে ২০০ টাকা পর্যন্ত দাবি করে। পরে তীব্র যাত্রীর কারণে অবশেষে সেই ভাড়া দিয়েই বাড়ি যেতে হয়। কেন এই নিয়ম? কেন এই গলাকাটা সিস্টেম? দেখার কি কেউ নেই?
ঈদ আসলেই তাদের এই সিস্টেম আরো নতুনভাবে চালু করে। যাত্রীদের তাদের ফাঁদে পেলে হাতিয়ে নেয় ইচ্ছে মতো ভাড়া। অসহায় হয়ে যাত্রীরা মেনে নেয় এই ভাড়া সিস্টেম। কিছুই করার থাকে না, বাড়ি যে যেতে হবে। অথচ এত এত হয়রানীর মুখে পড়লেও যাত্রীদের হয়ে কথা বলতে কোনো জনপ্রতিনিধিদের আজ অবধি তেমন চোখে পড়েনি। দুই একজন যাত্রী এ বিষয়ে গলা ফাটালেও শেষ অবধি কোনো ফলপ্রসূ হয় না। কারণ যান মালিক সমিতির কাছে যেন তারা অসহায়মাত্র।
যেখানে জলদী থেকে শহরে আসতে একই সময় একই দুরত্ব সেখানে একেকটি যানবাহনের একেক রকমের ভাড়া। সুপার সার্ভিসের ১১০ টাকা ধার্য্য থাকলে সেই জায়গায় এসআলম বাসে ১৩০ টাকা। পাশাপাশি অন্যান্য লোকাল বাসে সেই ভাড়া ১০০ থেকে ১১০ টাকা।
এছাড়া বাঁশখালী সড়কে চলাচলরত বাসগুলো তাদের নির্দ্দিষ্ট স্টেশন ড্রপ করে যাত্রী না নিয়ে বেশী ভাড়ার প্রত্যাশায় একটি (দূরের) স্টেশন থেকে সব যাত্রি নিয়ে ব্যালেন্সলেস করে চরমভাবে যাত্রী হয়রানী করছে। শহরমুখি যাত্রীদের বাসের জন্য বসে ঘন্টা পার হতে হয় তবুও কাউন্টারেও মিলে না টিকেট! স্টেশনের সামনে দাড়িয়ে অধিক ভাড়ায় টিকেট ছাড়া যাত্রী ভরছে লক্করঝক্কর বাসগুলো। এসব দেখে যাত্রীরা ও সাধারণ মানুষ অস্থির ও অতিষ্ট।
প্রয়োজনের তুলনায় ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় প্রতিনিয়ত সড়কে তীব্র যানযট লেগেই থাকে। এভাবে আর কতোদিন? তাহলে কি আমরা সিন্ডিকেটের কবলে, নাকি সিন্ডিকেট ভাঙ্গার শক্তি নাই! এসব থেকে পরিত্রাণ চাই সাধারণ যাত্রী সমাজ। ভাড়া নৈরাজ্য, যাত্রী হয়রানী, যানযট নিরসণে সচেতন ভুমিকা চাই। পাশাপাশি বাঁশখালীর মানুষের গণদাবী ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধ করা, ভাড়া তালিকা প্রণয়ন করা, যানযট নিরসণে ট্রাফিক পুলিশ বসানো।
লিখেছেনঃ তৌহিদ-উল বারী
শিক্ষার্থী ও কলামিস্ট