1. news@banshkhalisanglap.com : বাঁশখালী সংলাপ : বাঁশখালী সংলাপ
  2. info@www.banshkhalisanglap.com : বাঁশখালী সংলাপ :
শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
চাম্বল খাদিজাতুল কোবরা মহিলা দাখিল মাদরাসার এডহক কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ইসমাইল “শীলকূপ” শাহ আমিনিয়া সড়ক সংস্কার চাই বাঁশখালীতে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত গোপনীয়তার দেয়াল ভেঙে সহিংসতার মঞ্চে ফেসবুক স্বর্ণের প্রলোভনে প্রতারণার ফাঁদে ‘আবদুছ সবুর’ এর গল্প মাধ্যমিকে স্কুল পর্যায়ে রফিকুল ইসলাম গুণী শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত মাদরাসা পর্যায়ে বাঁশখালীর গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হলেন মুহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন ওয়াশরুমে আটকা পড়া স্কুলছাত্রীকে বাঁশখালী ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান বাঁশখালীতে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণে পুলিশের মতবিনিময় সভা বাঁশখালীর ‘পশ্চিম বাঁশখালায়’ অগ্নিকাণ্ডে ৫টি পরিবার নিঃস্ব, খোলা আকাশের নিচে ঠাঁই

ঐতিহাসিক পলাশী দিবস: এক বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস ও স্বাধীনতার ছিনতাই

  • প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫
  • ১১৭ বার পড়া হয়েছে

জ ২৩ জুন—বাঙালির ইতিহাসে এক গভীর কালো দিন, এক চিরস্থায়ী যন্ত্রণার নাম। ১৭৫৭ সালের এই দিনে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের। কিন্তু এই পরাজয় শুধু কোনো যুদ্ধের নয়, এটি ছিল এক গভীর ষড়যন্ত্রের ফসল—যেখানে শত্রুর গোলার চেয়ে ভয়ঙ্কর ছিল আপনজনের ছুরি।

‍ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: বাংলার নবাব আলীবর্দী খানের নাতি ও উত্তরসূরি হিসেবে ১৭৫৬ সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সে নবাব সিরাজউদ্দৌলা সিংহাসনে আরোহণ করেন। তাঁর শাসন ছিল শক্তিশালী, তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত জমিদার ও ইংরেজ বণিকদের সীমাহীন ক্ষমতা ও শোষণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। এই বলিষ্ঠ অবস্থান ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্য ছিল এক বড় হুমকি। তাই কোম্পানি কূটচালে নামল—এবং ইতিহাসের অন্যতম নিকৃষ্ট ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সৃষ্টি করল “পলাশীর যুদ্ধ”।

‍পলাশীর প্রান্তরে: যুদ্ধ না বিশ্বাসঘাতকতা? ২৩ জুন, ১৭৫৭—পলাশীর আমবাগানে সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক যুদ্ধ। নবাব সিরাজউদ্দৌলার সেনাবাহিনীতে ৫০ হাজার সৈন্য, আর ইংরেজ রবার্ট ক্লাইভের বাহিনীতে মাত্র ৩ হাজার। সংখ্যার দিক দিয়ে নবাব অনেক এগিয়ে ছিলেন, কিন্তু সেই সেনাবাহিনীর প্রধান অংশের নেতৃত্বে ছিল মীর জাফর—যিনি ইংরেজদের সঙ্গে গোপনে আঁতাত করেছিলেন। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল রায় দুর্লভ, জগৎশেঠ, ও কিছু উচ্চপদস্থ ব্যক্তি—যারা ব্যক্তিস্বার্থে বেছে নিয়েছিল জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার পথ।

যুদ্ধের মূল অংশে নবাবের একমাত্র বিশ্বস্ত বাহিনী ছিল মীর মদন ও মোহনলাল-এর নেতৃত্বে, যারা প্রাণপণে লড়াই করে ক্লাইভের বাহিনীকে চাপে ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু মীর মদনের মৃত্যু এবং প্রধান সেনা অংশের নিষ্ক্রিয়তা যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত সিরাজউদ্দৌলা পালিয়ে যান এবং ধরা পড়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

‍মীর জাফর: ইতিহাসের কলঙ্কিত নাম: মীর জাফর নামটি আজও বাঙালির ইতিহাসে বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক। তার ক্ষমতার লোভ ও ব্যক্তিগত উচ্চাভিলাষ পুরো একটি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে বেঁধে দেয়। তার হাত ধরেই ব্রিটিশরা কেবল বাংলাই নয়, পুরো ভারতবর্ষকে পরবর্তী প্রায় ২০০ বছর শাসন করার সুযোগ পায়। এই বিশ্বাসঘাতকতা শুধু একটি যুদ্ধ হারা নয়, এটি ছিল আত্মার পরাজয়, জাতির বিক্রয়।

‍পলাশী যুদ্ধের পরিণতি: পলাশী যুদ্ধের ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। ইংরেজরা রাজনৈতিকভাবে বাংলা দখল করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা ধাপে ধাপে উপমহাদেশের পুরো শাসনভার দখলে নেয়। বাংলার বিপুল সম্পদ লুটপাট করে ব্রিটেনে নিয়ে যায়। কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য—সব খাতে ধ্বংস নেমে আসে। বাংলার তাঁতশিল্প, যা এক সময় বিশ্ববিখ্যাত ছিল, ধ্বংস করে দেওয়া হয় ইংরেজদের স্বার্থে। লক্ষ লক্ষ মানুষ দারিদ্র্যে নিমজ্জিত হয়, এবং ১৭৭০ সালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে প্রাণ হারায় প্রায় এক কোটি মানুষ।

পলাশী দিবস আমাদের শুধু অতীতের কথা মনে করিয়ে দেয় না, বরং ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা দেয়—জাতি হিসেবে আমাদের মধ্যে ঐক্য, সততা, এবং দেশপ্রেম ছাড়া টিকে থাকা সম্ভব নয়। ইতিহাস বলছে, বাইরের শত্রুর চেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর হয় যখন নিজের ঘরে বিশ্বাসঘাতক জন্ম নেয়। জাতির স্বার্থে আমাদের প্রতিজ্ঞা করা উচিত—আর কোনো “মীর জাফর” যেন জন্ম না নেয়।

২৩ জুন শুধু একটি দিন নয়—এটি আমাদের জাতীয় আত্মোপলব্ধির দিন। যে দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সততা, আত্মত্যাগ ও নেতৃত্ব কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি ইতিহাস ভুলে যাই, তাহলে আবারও এমন কালো অধ্যায় ফিরে আসতে পারে। তাই এই দিনটি হোক জেগে ওঠার দিন—ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষা দেওয়ার দিন, আর বিশ্বাসঘাতকতা নয়, ঐক্যের পতাকা তুলে ধরার দিন

আব্দুর রহিম
লেখক ও শিক্ষার্থী

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট