যুদ্ধ হয় আধিপত্য বিস্তারের স্বার্থে। শক্তিশালী রাষ্টগুলো মিত্রদের পক্ষ নেয় প্রতিপক্ষকে দমানোর জন্য। এতে করে লেগে যায় বিশ্বযুদ্ধ। ১ম ও ২য় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস তাই বলে। ধরলাম ৩য় বিশ্বযুদ্ধ লাগতে চলেছে। সবার মনে একটাই প্রশ্ন করে বাংলাদেশ কোন পক্ষে যাবে.? অনেকে উত্তর ও রেডি করে ফেলেছেন হয়তো এরই মধ্যে।আমরা ইরান ও তার মিত্রদের পক্ষে অবস্থান নিবো। ব্যাক্তিগতভাবে আমিও এদের পক্ষে। এখন বাস্তবতায় ফেরা যাক, কোন পক্ষে যাবে বাংলাদেশ সেটা মূখ্য না, মূখ্য হলো বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা। শুধু মুখে সমর্থন জানিয়ে কি যুদ্ধে অংশ নিবেন.?
বাংলাদেশে নাই কোনো ক্ষেপণাস্ত্র, মিসাইল, পারমাণবিক শক্তি, নাই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা। শুধু ফাকা বুলি দিয়ে বেড়াচ্ছি আমরা এগিয়ে যাচ্ছি বহিঃবিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে। তাল কই মিলাইলাম.? আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা শুধু ব্যানারে,রাজপথে ও স্লোগানে সীমাবদ্ধ। বাস্তবে কিছুই নাই। গবেষনা নেই,প্রযুক্তির আবিষ্কার নেই। গবেষনাখাতে বাজেট নাই তাহলে কি নিজ টাকায় গবেষণা করবো ? মেধাবীদের দৌড় সচিবালয়ের ডেস্ক পর্যন্ত। এর বাইরে গিয়ে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা নিয়ে মাথা ঘামানোর মতো কেউ নাই। আমরা এগিয়ে চলি ভারত,পাকিস্তান,চীন, রাশিয়ার আধিপত্য নিয়ে।দম্ভ করি এদের নিয়ে,কিন্তু এই বন্ধু রাষ্ট্রগুলো ও যে রাজনৈতিক, কূটনীতিক স্বার্থে আমাদের বিরুদ্ধে যেতে পারে এই বাস্তবতাটুকু আমরা মেনে নিতে চাই না।
আমাদের আছে ৫২, ৬৯,৭১ এর চেতনা। আছে মুজিবীয় চেতনা,আছে জিয়ায়ী চেতনা, সর্বশেষ ২৪ এর চেতনা। কারো আছে পাকিস্তানের প্রতি একগাধা ভালোবাসা,আর কারো আছে ভারতের পা চাটাচাটির গৌরব । চেতনা বিক্রি করে ক্ষমতায় যাওয়া বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের কর্ম হয়ে দাড়িয়েছে। দেশকে নিয়ে, দেশের উন্নয়ন খাত নিয়ে, প্রতিরক্ষা নিয়ে গবেষনা করে উন্নতমানের ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরী নিয়ে ভাবার ফুসরত নাই কারো। নিজস্বতা বলতে কিছু নাই আমাদের। কেউ রাজপথে ফাকা বুলি দিয়ে খেলাফত গঠন করে। আর কেউ ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করে আর কেউ কেউ চেতনা বিক্রি করে। আমাদের দৌড় এইটুকু।
আজকে কেউ যদি আমাদের সীমান্তে মিসাইল ছুড়ে তাহলে আমরা একটা জিনিসই করতে পারবো, মাথায় আর পিঠে পতাকা মুড়ে শাহবাগ ঘেরাও করে নিন্দা আর প্রতিবাদ জানাতে পারবো। চোখে চোখ রেখে এগিয়ে যাওয়ার দম্ভ আমাদের নাই। এসব কি চিন্তা করেছেন কখনো.? শুধু বলে বেড়াচ্ছেন আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। হ্যা, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি উপনিবেশের অদৃশ্য শেকলের দিকে। যা আমাদের পূর্বপুরুষদের ও বন্দি রেখেছিলো। বহিঃবিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে আগে প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থার উন্নয়ন, পরে অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন করা দরকার। শক্তিধর রাষ্টেগুলোর চোখ দক্ষিনপূর্ব এশিয়ার দিকে। এখানে তাদের আধিপত্য কম। আধিপত্য বিস্তারে যুদ্ধের দামামা বাজতে দেরী নেই হয়তো। তবে আমরা কি প্রস্তুতি নিচ্ছি.? হ্যা! আমরা চেতনা,রাজপথ, স্লোগান দিয়ে প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা জোরদার করছি। এসব দিয়েই জবাব দিবো তাদের। দুঃখজনক হলেও, এটাই আমাদের ভবিষ্যৎ।
লেখক-
✍️আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ
(শিক্ষার্থী-মাস্টার নজির আহমদ কলেজ)