1. news@banshkhalisanglap.com : বাঁশখালী সংলাপ : বাঁশখালী সংলাপ
  2. info@www.banshkhalisanglap.com : বাঁশখালী সংলাপ :
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বাঁশখালীতে সাগরে ভেসে আসা অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল! বাঁশখালী উপকূলে বেড়িবাঁধ এখনও স্বপ্ন! বাঁশখালীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জায়গা দখলের অভিযোগ ‘ন্যায়ভিত্তিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতেই লিগ্যাল এইড’ বাঁশখালীতে আইন সহায়তা দিবসে বক্তারা গন্ডামারায় পুকুরে গোসল করতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু দিনব্যাপী হজ্ব প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও হাজ্বী সমাবেশ সম্পন্ন বাঁশখালী থেকে মাদরাসা ছাত্র নিখোঁজের একসপ্তাহেও সন্ধান মেলেনি “মাধ্যমিক শিক্ষা ভাবনা” জব্বারের বলীখেলায় আবারও ১১৬ তম চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরীফ অপসংস্কৃতি কালের বিবর্তনে মূল ধারার সংস্কৃতিরূপে আত্মপ্রকাশ করে

ছোট পর্দার নাটক: কী শিখছে তরুণ সমাজ?

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৮ মার্চ, ২০২৫
  • ৩২ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের বিনোদন জগতে ছোট পর্দার নাটক সবসময়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। বিশেষত তরুণ সমাজের মাঝে এসব নাটকের প্রভাব ব্যাপক। ছোট পর্দার নাটক একসময় ছিল পারিবারিক বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। সেসময় নাটকগুলোতে সমাজের বিভিন্ন সমস্যা, মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতি অত্যন্ত শৈল্পিকভাবে উপস্থাপন করা হতো। ফলে দর্শক নাটক দেখে যেমন আনন্দ পেতেন, তেমনি অনেক কিছু শিখতেও পারতেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নাটকের বিষয়বস্তুতে এক ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে যা তরুণ সমাজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। নাটকের গল্পে এখন অনেক বেশি স্থান পাচ্ছে খোলামেলা পোশাক, অবাধে ঘনিষ্ঠতা, এবং কখনও কখনও মাদক গ্রহণের দৃশ্য।

বর্তমানে নাটকের গল্পে প্রেম ও সম্পর্কের বিষয়টিকে যে উপায়ে তুলে ধরা হচ্ছে, তা বাস্তব জীবনের মূল্যবোধ থেকে অনেকটাই বিচ্যুত। একসময় নাটকে ভালোবাসা মানে ছিল পারস্পরিক সম্মান, ত্যাগ আর দায়িত্ববোধ। কিন্তু এখনকার নাটকগুলোতে প্রেমের বিষয়টি প্রায়শই শারীরিক আকর্ষণ আর অবাধ মেলামেশার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। এসব নাটকে চরিত্রগুলোকে অতিমাত্রায় ঘনিষ্ঠ অবস্থায় উপস্থাপন করা হয়, যা তরুণদের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি করতেছে। তরুণ দর্শকরা যখন এই নাটকগুলো দেখে, তখন তারা সম্পর্কের গভীরতা না বুঝে শুধুমাত্র বাহ্যিক দিকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। ফলে বাস্তব জীবনে সম্পর্কের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাচ্ছে।

এছাড়া সাম্প্রতিক নাটকগুলোতে খোলামেলা পোশাকের ব্যবহারও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। পোশাক মানুষের ব্যক্তিত্ব প্রকাশের একটি মাধ্যম, তবে নাটকে যখন অপ্রাসঙ্গিকভাবে এমন পোশাককে তুলে ধরা হয় যা সমাজের প্রচলিত রীতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, তখন তা তরুণদের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করে। বিশেষত যারা কিশোর বয়সে এসব নাটক দেখে, তারা সহজেই এ ধরনের ফ্যাশন অনুসরণ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। পোশাকের এই পরিবর্তন যে শুধুই সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য তা নয়, বরং এটি অনেক সময় সামাজিক অবক্ষয়কে উসকে দেয়। নাটকে যখন বারবার এমন দৃশ্য উঠে আসে, তখন তা তরুণদের নৈতিক অবস্থানকে দুর্বল দিচ্ছে।

আরেকটি গুরুতর সমস্যা হলো নাটকে প্রকাশ্যে মাদক গ্রহণের দৃশ্য। কিছু নাটকে মাদকের ব্যবহারকে এমনভাবে দেখানো হয় যেন এটি অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। কেউ দুঃখ পেলে, হতাশ হলে কিংবা আনন্দ উদযাপনের সময় মাদক গ্রহণের দৃশ্য এখন প্রায়শই নাটকের অংশ হয়ে উঠছে। অনেক নির্মাতাই যুক্তি দেন যে, তারা বাস্তবতা তুলে ধরছেন। কিন্তু বাস্তবতা তুলে ধরতে গিয়ে যখন মাদক গ্রহণকে স্বাভাবিক, রোমাঞ্চকর বা আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করা হয়, তখন তরুণ দর্শকদের মনে মাদকের প্রতি আগ্রহ তৈরি হতে পারে। এ ধরনের নাটক দেখে অনেক তরুণ মনে করে, হতাশা কাটানোর সহজ উপায় হলো মাদকের আশ্রয় নেওয়া। অথচ মাদক যে কী ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে, তা অনেক নাটকেই ফুটিয়ে তোলা হয় না। ফলে নাটকের মাধ্যমে মাদকের প্রতি এক ধরনের প্রশ্রয় দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়, যা সমাজের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

তরুণ সমাজ নাটক দেখে অনুপ্রাণিত হয়, এটি স্বাভাবিক। তারা নাটকের চরিত্রগুলোর জীবনধারা অনুসরণ করে, তাদের ভাষা, পোশাক এমনকি আচরণও অনুকরণ করতে থাকে। কিন্তু যখন এসব নাটকে নৈতিকতা বা সামাজিক মূল্যবোধ উপেক্ষিত হয়, তখন তরুণদের মানসিক গঠনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। নাটকের গল্পে যখন সাফল্য পাওয়ার সহজ রাস্তা হিসেবে প্রতারণা, অবৈধ সম্পর্ক কিংবা অসৎ পন্থার ব্যবহার দেখানো হয়, তখন তরুণদের মধ্যেও এমন মানসিকতা গড়ে উঠতে পারে। সমাজে ক্রমবর্ধমান অবক্ষয়ের পেছনে এমন নাটকের প্রভাব অস্বীকার করার উপায় নেই।

তবে এটি ঠিক যে, সব নাটকই নেতিবাচক বার্তা বহন করে না। অনেক নাটক সমাজের সমস্যা ও বাস্তবতার দিকগুলো তুলে ধরে। বিশেষ করে পারিবারিক সম্পর্ক, বন্ধুত্ব ও সামাজিক বন্ধন নিয়ে নির্মিত অনেক নাটক আজও দর্শকদের মনে দাগ কাটে। কিন্তু এসব ইতিবাচক নাটকের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কমে যাচ্ছে। দর্শকদের আগ্রহকে পুঁজি করে অনেক নির্মাতা দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়ার আশায় এমন গল্প তৈরি করছেন, যা তরুণদের মনোজগতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য নির্মাতাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। তাদের উচিত এমন গল্প রচনা করা যা শুধু বিনোদন নয়, বরং শিক্ষামূলক বার্তাও পৌঁছে দেয়। নাটকে মাদক গ্রহণ, খোলামেলা পোশাক বা অবাধ সম্পর্ক দেখাতে হলে তা এমনভাবে উপস্থাপন করা উচিত, যা দর্শকদের সচেতন করবে এবং এসব বিষয় থেকে দূরে থাকতে উৎসাহিত করবে। শুধুমাত্র দর্শকদের আকর্ষণ পাওয়ার জন্য বিতর্কিত বিষয়গুলোকে নাটকের প্রধান উপাদান করে তোলার প্রবণতা বন্ধ করা প্রয়োজন।

অভিভাবকদেরও এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তরুণদের সবসময় নাটক থেকে দূরে রাখা সম্ভব নয়, তবে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা এবং নাটকের নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরলে তারা এসব বিষয় থেকে সচেতন হতে পারে। তরুণদেরও নিজস্ব উপলব্ধি গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে। সব নাটকের ঘটনা বা চরিত্র অনুকরণযোগ্য নয়, এই উপলব্ধি তাদের মনে তৈরি করা জরুরি।

 

লেখক:

✍️আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট