ইসরায়েল কাতারে যুদ্ধ বিরতির আলোচনা চলাকালীন হামলা চালিয়েছে। খবরটি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বমিডিয়ায়। অথচ আশ্চর্যের বিষয়, এত বড় ঘটনার পরও দোহা থেকে কোনো প্রতিবাদ, কোনো কোনো কড়া বার্তা শোনা যায়নি। যেন কিছুই ঘটেনি। নিন্দা জানানোই কি সমাধান.? অথচ এই কাতারই কিছুদিন আগে ইরানের মার্কিন ঘাটিতে হামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রকাশ্যে হুশিয়ারি দিয়েছিল। ইরানকে পাল্টা আঘাতের হুমকি পর্যন্ত ছুড়ে দিয়েছিল। তাহলে ইসরায়েলের আগ্রাসনের মুখে এই নীরবতা কিসের ইঙ্গিত? নীরবতা কি আসলে পরোক্ষ সমর্থন নয়?
আরব রাষ্ট্রগুলোকে ফিলিস্তিনের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র বলা হতো। গাজার মানুষের জন্য অর্থ পাঠানো, মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া, এমনকি হামাস নেতাদের আশ্রয় দেওয়ার মতো ভূমিকা পালন করেছে তারা। কিন্তু আজ যখন ইসরায়েলের হামলায় নিজেদের ভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তখনো ফিলিস্তিনের প্রশ্নে তাদের কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হয়ে গেছে। এটি নিছক কূটনৈতিক কৌশল নয় এটি বিশ্বাসঘাতকতা।
তেল ও গ্যাসের লোভে, অস্ত্র চুক্তির প্রলোভনে, কিংবা সিংহাসন রক্ষার ভয়ে ফিলিস্তিনের রক্ত ভুলে যাচ্ছে তারা। সৌদি আরব প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। আর কাতার? তারা হয়তো ভেবেছে প্রতিবাদ করলে শক্তিধর পশ্চিমা মিত্ররা রুষ্ট হবে, ব্যবসায় ক্ষতি হবে। তাই নীরব থাকাই নিরাপদ। এই মানসিকতায় কাপুরুষতার পরিচয় দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য।
কিন্তু এই নীরবতা গাজার শিশুর রক্ত মুছতে পারবে না। এই নীরবতা জেরুজালেমের মসজিদে আল-আকসার আর্তনাদ ঢাকতে পারবে না। আরব রাষ্ট্রগুলোর ক্ষমতালোভী শাসকরা হয়তো ভুলে গেছে, একদিন ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না। ফিলিস্তিনের ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে যারা ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসা করছে, তাদের নাম রক্তাক্ষরে লেখা থাকবে বিশ্বাসঘাতকদের তালিকায়।
কাতারের এই নীরবতা তাই শুধু রাষ্ট্রের ব্যর্থতা নয় এটি পুরো আরব বিশ্বের পতনের প্রতীক। ফিলিস্তিনের জন্য যারা কণ্ঠ তুলতে পারছে না, তারা আসলে নিজেদের অস্তিত্বকেই ধ্বংস করছে। আজকের এই নীরবতা আগামী দিনের অভিশাপ হয়ে তাদের ওপরই ফিরে আসবে।
✍️ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ
শিক্ষার্থী: ইতিহাস বিভাগ, চট্টগ্রাম কলেজ