একসময় যে ভারতে দেওবন্দ মাদ্রাসাকে 'তালিবানি ঘাঁটি' আখ্যা দিয়ে তা ভেঙে দেওয়ার দাবি উঠেছিল, আজ সেই ভারতই রাষ্ট্রীয় প্রোটোকলে তালিবান নেতা আমীর খান মুত্তাকীকে মর্যাদাপূর্ণ অভ্যর্থনা জানাচ্ছে। ইতিহাস যেন নিজের ব্যঙ্গ নিয়ে ফিরে এসেছে- যেখানে গতকালের ঘৃণিত নাম, আজ রাষ্ট্রীয় কূটনীতির অতিথি।
ভারতের এই অবস্থান কেবল কূটনৈতিক নয়, বরং বাস্তব রাজনীতির এক নগ্ন প্রতিচ্ছবি। যে দেশ দীর্ঘদিন তালিবানবিরোধী অবস্থানকে নিজের নৈতিক উচ্চভূমি হিসেবে তুলে ধরেছিল, যে দেশ পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে তথাকথিত ‘তালিবানি প্রভাব’-এর অভিযোগে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল। আজ সেই দেশই তালিবান প্রতিনিধিকে নিরাপত্তা দিচ্ছে, সম্মান দিচ্ছে, আলোচনার টেবিলে আসন দিচ্ছে।
নীতির ভাষায় নয়, বাস্তবতার রাজনীতিতে- এ এক গভীর পরিহাস। কারণ রাষ্ট্রনীতি শেষ পর্যন্ত নৈতিকতার নয়, স্বার্থের খাতায় হিসাব মেলায়। যে 'সন্ত্রাসী' গতকাল পর্যন্ত নিন্দার পাত্র ছিল, সে-ই আজ কূটনীতির অংশীদার। ইতিহাসের এই পুনরাবৃত্তিই আমাদের শেখায়, বিশ্বরাজনীতিতে স্থায়ী শত্রু বা বন্ধু বলে কিছু নেই- আছে কেবল স্বার্থ ও শক্তির ভারসাম্য।
কিন্তু পৃথিবীর নিয়ম চিরকাল একই- ইতিহাস সবসময় বিজয়ীর কথাই শোনে। বিজয়ীর মুখে লেখা হয় সত্য, বিজয়ীর হাতে রচিত হয় ন্যায়ের সংজ্ঞা। পরাজিতের যুক্তি সেখানে গুরুত্ব হারায়, তার ত্যাগ মুছে যায় ধূলোর নিচে।
তাই আজও সেই অনন্ত সত্যই প্রতিধ্বনিত হয়-
বিজয়ী না হওয়া পর্যন্ত লড়াই থামানো যাবে না।
কারণ পৃথিবী মাথা নোয়ায় শক্তির সামনে,
কিন্তু সত্যিকারের সম্মান পায় কেবল সেই জাতি,
যে মাথা নোয়াতে শেখেনি।
লেখা-
আহমেদ হোসাইন
সিনিয়র শিক্ষক: রাঙ্গামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়।
প্রকাশক ও সম্পাদক : শিব্বির আহমদ রানা, ফোন নম্বর: ০১৮১৩৯২২৪২৮, 𝐄-𝐦𝐚𝐢𝐥: 𝐛𝐚𝐧𝐬𝐡𝐤𝐡𝐚𝐥𝐢𝐬𝐚𝐧𝐠𝐥𝐚𝐩@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
অস্থায়ী ঠিকানা: স্মরণিকা প্রিন্টিং প্রেস। উপজেলা সদর, জলদী, বাঁশখালী, পৌরসভা, চট্টগ্রাম
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত