শিহাব উদ্দিন: আবদুছ সবুরের বাড়ি বাঁশখালীর চাপাছড়ীতে। বছর কয়েক আগে তিনি তিথু হয়ে সাধনপুরে বসতি গেড়েছেন। একদিন, সেপ্টেম্বর ২০২০-এর শুরুর দিকে, তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি রওনা দিলেন। সাহেবের হাট থেকে একটি সিএনজি ধরে জলদীর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু হলো।
প্রথমদিকে সব স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু গুনাগরী স্টেশনে পৌঁছাতেই আরও তিনজন যাত্রী উঠল- একজন পিছনে, দুজন সামনে। গাড়ি আবার চলতে শুরু করল। কালীপুর হাই স্কুলের দক্ষিণে নাসেরা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ফটক পেরোনোর পর হঠাৎই এক যাত্রীর চোখে পড়ে একটি ব্যাগ। ব্যাগটি সিএনজির সামনের চাকায় আটকে ছিল।
কৌতূহলী হয়ে ব্যাগটি খোলা হলো। ভিতরে কিছু টাকা, একটি কাগজে স্বর্ণ বন্ধকের কথা লেখা, আর এক পাশে স্বর্ণের মতো চকচকে এক দলা ধাতু পাওয়া গেল। যাত্রীরা ফিসফিস করে কথা বলল- “এটা তো ভালো দামে বিক্রি হবে!”
একজন প্রস্তাব দিল, “গাড়িতেই বিক্রি করে দিই না কেন?”
প্রথমে আবদুছ সবুর চুপ করে ছিলেন। কিন্তু বারবার আলোচনায় তারও কৌতূহল জাগল। একপর্যায়ে তিনি নিজের স্ত্রীর পরনের কানফুল আর হাতের চুড়ির বিনিময়ে চকচকে দলাটি কিনে নিলেন। মনে মনে ভেবেছিলেন, হয়তো ভাগ্য সহায় হয়েছে!
কিন্তু ভাগ্য যে ভিন্ন কিছু লিখে রেখেছিল, তা টের পেলেন খানিক বাদেই। চেচুরিয়া বিলের মাঝামাঝি হঠাৎ সিএনজি থেমে গেল। চালক জানাল, গ্যাস ফুরিয়ে গেছে। আর যাবে না। সবুর দম্পতি বাধ্য হয়ে অন্য সিএনজিতে উঠে জলদীর পথে রওনা দিলেন।
অন্য তিন যাত্রী? তারা ওখানেই থেকে আবার শহরের দিকে চলে গেল।
জলদীতে পৌঁছে সবুর মিয়া সরাসরি এক স্বর্ণকারের দোকানে গেলেন। উত্তেজনায় ভরা মনে টুকরোটা পরীক্ষা করতে দিলেন। মিনিটখানেকের মধ্যেই স্বর্ণকারের রায়— “ভাই, এটা আসল নয়, একেবারেই ভেজাল ধাতু!”
সবুর মিয়ার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। বুঝতে আর বাকি রইল না— তিনি চরম এক প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এরপর থেকে তিনি সবার উদ্দেশে একটাই বার্তা ছড়িয়ে দেন- “অচেনা লোকের প্রলোভনে পড়বেন না। একটু অসাবধানতাই আপনাকে সর্বস্বান্ত করে দিতে পারে।”
প্রকাশক ও সম্পাদক : শিব্বির আহমদ রানা, ফোন নম্বর: ০১৮১৩৯২২৪২৮, 𝐄-𝐦𝐚𝐢𝐥: 𝐛𝐚𝐧𝐬𝐡𝐤𝐡𝐚𝐥𝐢𝐬𝐚𝐧𝐠𝐥𝐚𝐩@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
অস্থায়ী ঠিকানা: স্মরণিকা প্রিন্টিং প্রেস। উপজেলা সদর, জলদী, বাঁশখালী, পৌরসভা, চট্টগ্রাম
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত