একটা শিরোনাম, এক-দু’টি ছবি, রঙিন ডিজাইন—তার নিচে বড় অক্ষরে লেখা “বিস্তারিত কমেন্টে”। ব্যস, এটুকুই। এভাবেই এখন গড়ে উঠছে নতুন প্রজন্মের তথাকথিত সাংবাদিকতা। অথচ যারা এসব করছে, তাদের অনেকেই আদৌ সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা বা মৌলিক নিয়ম জানে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রতিনিয়ত আমরা এ বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছি। গ্রাফিক বা ভিজ্যুয়াল ব্যাকগ্রাউন্ডের ওপর তথ্য সাজিয়ে দেওয়া, তার সঙ্গে একটি প্রাসঙ্গিক ছবি যুক্ত করা—এটিকে বলা হচ্ছে সংবাদের ফটোকার্ড। সংবাদমাধ্যমগুলোও দ্রুত পাঠকের কাছে খবর পৌঁছাতে এমন ভিজ্যুয়ালনির্ভর উপস্থাপনায় ঝুঁকছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো—যে সংবাদে শিরোনামের সঙ্গে প্রকৃত ঘটনার সামঞ্জস্য নেই, সেটি আসলে কেন প্রচার করা হবে? অনেক সময় দেখা যায়, শুধুমাত্র সাময়িক জনপ্রিয়তা, শেয়ার বা ভিউয়ের জন্য চাঞ্চল্যকর ও অতিরঞ্জিত শিরোনাম ব্যবহার করা হচ্ছে। পাঠক মূল সংবাদ পড়তে গিয়ে হতাশ হচ্ছে, কখনো কখনো ক্ষোভও প্রকাশ করছে। ফলে এই ফটোকার্ড সাংবাদিকতা একধরনের প্রতারণার ফাঁদে পরিণত হচ্ছে।
এর ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে মূলধারার সাংবাদিকতায়। প্রকৃত সংবাদ নিয়েও সাধারণ মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করছে। আসল খবর আর ভুয়া খবরের সীমারেখা অস্পষ্ট হয়ে পড়ছে। সত্য ঘটনা অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে, আবার অসত্য তথ্যকেও অনেকে সত্য ভেবে নিচ্ছে। এর ফলে গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তাহলে প্রশ্ন ওঠে—এ কি সংবাদ প্রচার, নাকি নিছক ভিউ ব্যবসা? প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার নামে যাচাই-বাছাইহীন কনটেন্ট প্রকাশ কেবল সাংবাদিকতার মানই নামিয়ে দিচ্ছে না, বরং মিথ্যা ও ভুয়া সংবাদকে বৈধতা দিচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহে নিন্দনীয়।
এই প্রবণতা বন্ধ না করলে ফটোকার্ড সাংবাদিকতার ভিড়ে প্রকৃত সাংবাদিকতা ধীরে ধীরে আস্থাহীন ও অগ্রহণযোগ্য হয়ে পড়বে। তাই আইনগত পদক্ষেপ নিয়ে ভুয়া ও প্রতারণামূলক এই কার্যক্রম ঠেকানো জরুরি। অন্যথায় মূলধারার সাংবাদিকতা ক্রমশ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠবে।
✍️ তৌহিদ-উল বারী
শিক্ষার্থী ও তরুণ লেখক
প্রকাশক ও সম্পাদক : শিব্বির আহমদ রানা, ফোন নম্বর: ০১৮১৩৯২২৪২৮, 𝐄-𝐦𝐚𝐢𝐥: 𝐛𝐚𝐧𝐬𝐡𝐤𝐡𝐚𝐥𝐢𝐬𝐚𝐧𝐠𝐥𝐚𝐩@𝐠𝐦𝐚𝐢𝐥.𝐜𝐨𝐦
অস্থায়ী ঠিকানা: স্মরণিকা প্রিন্টিং প্রেস। উপজেলা সদর, জলদী, বাঁশখালী, পৌরসভা, চট্টগ্রাম
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত